ভার্চুয়াল জগতের সবচেয়ে আলোচিত দুই প্রাণী পান্ডা ও পেঙ্গুইনের পরিচয় এবং এদের থেকে সাইটকে নিরাপদ রাখার কৌশল। Part: 3


>> ইন্টারনাল লিঙ্কিং প্যাটার্নঃ ইন্টারনাল লিঙ্কিং হলো সাইটের ভেতরের বিভিন্ন লিঙ্ক, যেগুলো সাইটের এক পেজকে অন্য এক বা একাধিক পেজের সাথে লিঙ্কিং করে। অর্থাৎ সাইটের মধ্যে বিভিন্ন পেজকে এ্যাঙ্কর টেক্সট্ এর মাধ্যমে যে লিঙ্কিং করা হয় সেটাকে ইন্টারনাল লিঙ্কিং বলে। এই লিঙ্কগুলোর মাধ্যমে ভিজিটররা সহজেই সাইটের এক পেজ থেকে অন্য পেজে যেতে পারে। সাইটের ইন্টারনাল লিঙ্কিং এমন হওয়া উচিৎ যাতে ভিজিটররা হোমপেজ থেকে সাইটের অন্যান্ন বিভিন্ন পেজে যেতে পারে এবং এই লিঙ্কগুলোর এ্যাঙ্কর টেক্সট্গুলো দেখেই যেন বোঝা যায় সেখানে ক্লিক করলে কোন পেজ ওপেন হবে। মুলত সাইটের মধ্যে ভিজিটররা যাতে খুব সহজেই নেভিগেশন করতে পারে সেভাবেই লিঙ্কিং করতে হবে। এতে ভিজিটররা সাইট ব্রাউজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে তাছাড়া ইন্টারনাল লিঙ্কিং ভালো হলে গুগোলও সেটাকে ভালো চোখে দেখে।
>> মেটাডেটাঃ সাইটের এসইও এর জন্য মেটা ট্যাগ গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখে। মেটা ট্যাগের সাহায্যে সাইটের মধ্যে যেকোন পেজ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। তাছাড়া গুগোল কোন পেজ সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য পেতে মেটা ট্যাগের ওপর নির্ভর করে। তাই বুঝতেই পারছেন মেটা ট্যাগ সাইটের জন্য কতটা গুরুত্বপুর্ন, এজন্য অবশ্যই সঠিকভাবে এবং সঠিক পদ্ধতিতে সাইটে মেটা ট্যাগ দিতে হবে। প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে আপনি অবশ্যই ভিজিটরদের জন্য মেটা ট্যাগ তৈরী করছেন, গুগোলের জন্য না। তাই আগে খেয়াল রাখতে হবে ভিজিটরদের কথা তারপর গুগোল। অর্থাৎ মেটা ট্যাগে শুধুমাত্র কিওয়ার্ড বসিয়ে সার্চ ইঞ্জিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলে সেটা ক্ষতি ছাড়া কোন উপকার করবে না। কারন গুগোল পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে ভিজিটরদের কথা খেয়াল রেখে এসইও করুন, গুগোলের কথা না। তাই অবশ্যই মানসম্পন্ন মেটা ট্যাগ তৈরী করে সেটা সাইটে দিতে হবে।
>> এ্যাড রেশিওঃ আপনি সাইট তৈরী করেছেন সেটা থেকে আয় করার জন্য আর সেই আয় করতে হলে আপনার সাইটে অবশব্যই এ্যাড বা বিজ্ঞাপন দিতে হবে। কিন্তু এই এ্যাডের পরিমান যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে পান্ডা হিটের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মুলত কোন সাইটের পেজে যদি কন্টেন্ট রিলেটেড এ্যাড অত্যাধিক বেশি পরিমানে থাকে তাহলে সেই সাইটে পান্ডা এ্যাটাকের সম্ভাবনা আছে। তাই সাইটে অত্যাধিক মাত্রায় এ্যাড দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে আর তাছাড়া কোন সাইটে অতিরিক্ত বেশি পরিমানে এ্যাড থাকলে গুগোল সেটাকে স্প্যাম হিসেবে দেখে, আর গুগোলের চোখে কোন সাইট স্প্যামিং সাইট হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার ফল কি সেটা আগেই বলেছি। কিন্তু সাইট থেকে ইনকাম করতে হলে তো অবশ্যই সাইটে এ্যাড দিতে হবে। তাই সঠিক পদ্ধতিতে, সঠিক রেশিও ফলো করেই কাজটা করতে হবে।
>> ক্লোকিং টেকনিকঃ ক্লোকিং হলো এক ধরনের ব্লাকহ্যাট এসইও টেকনিক যেটা ব্যাবহারের মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনকে এক ধরনের কন্টেন্ট দেখানো হয় এবং ভিজিটরদেরকে অন্য ধরনের কন্টেন্ট দেখানো হয়। অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিন স্পাইডার বা ক্রউলার যখন কোন ওয়েব সাইটের কোন পেজে যায় তখন সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং এর মাধ্যমে এদেরকে ভালো মানের ও তথ্যবহুল কন্টেন্ট দেখানো হয় তাই সার্চ ইঞ্জিন ক্রউলার সেটাকে সার্চ রেজাল্টে ভালো র্যাঙ্কিং এ রাখে। কিন্তু কোন ভিজিটর যখন ব্রাউজারের মাধ্যমে সার্চ রেজাল্ট খেকে ওই পেজে যায় তখন একই ধরনের সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং ব্যাবহারের মাধ্যমে ভিজিটরের ব্রাউজারে স্প্যামিং কন্টেন্ট প্রদর্শন করা হয়। ক্লোকিং এর মুল উদ্যেশ্যই হলো স্প্যামিং করে অবৈধভাবে ইনকাম করা। কিন্তু গুগোল এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট তাই এখন আর ক্লোকিং করে পার পাওয়ার কোন উপায় নেই। এখনকার সময়ে ক্লোকিং করলে গুগোল সেটাকে ধরতে সক্ষম এবং সাইটকে পেনালাইজ করতে প্রস্তুত। তাই সাইটে ক্লোকিং করা থেকে সম্পুর্নরুপে বিরত থাকতে হবে।
>> ডোরওয়ে পেজঃ ডোরওয়ে পেজকেও এক ধরনের ক্লোকিং টেকনিকই বলা যায়, যার প্রধান উদ্যেশ্যই মুলত স্প্যামিং এর মাধ্যমে ইনকাম করা। কেও যদি ডোরওয়ে পেজ ক্রিয়েট করে এবং কোন ভিজিটর যদি সার্চ রেজাল্ট থেকে ওই পেজে ক্লিক করে তাহলে সেই ভিজিটর একটি মেটা রিফ্রেশ কমান্ডের মাধ্যমে অন্য একটি পেজে রিডাইরেক্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ ভিজিটরের ব্রাউজারে একটি স্প্যামিং কন্টেন্ট ধারনকৃত পেজ ওপেন হবে। এটাও একটি ব্লাকহ্যাট এসইও টেকনিক এবং এটা গুগোলের নীতিমালা ভঙ্গ করে। তাই সাইটে কখনো ডোরওয়ে পেজ তৈরী করা উচিৎ নয়।
.
# অফপেজ এসইও এর ক্ষেত্রেঃ
>> রিলেভেন্ট ব্যাকলিঙ্কঃ ওয়েব সাইটকে র্যাঙ্ক করাতে ব্যাকলিঙ্ক দারুন সহযোগিতা করতে পারে। কিন্তু গুগোল স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে যে, ব্যাকলিঙ্কগুলো অবশ্যই রিলেভেন্ট সাইট থেকে নিতে হবে। অর্থাৎ এমন কোন সাইটে ব্যাকলিঙ্ক করতে হবে যে সাইটের বিষয়বস্তুর সাথে ব্যাকলিঙ্ককারী সাইটের বিষয়বস্তুর মিল আছে। তাই অবশ্যই নিশ বা কিওয়ার্ড রিলেটেড সাইটে ব্যাকলিঙ্ক করতে হবে। এটা র্যাঙ্কিং এ যেমন সহায়তা করে তেমনই ওই সব সাইট থেকে ভিজিটর আনতেও সাহায্য করে।
>> ব্যাকলিঙ্ক কুয়ালিটিঃ সাইটের জন্য যে ব্যাকলিঙ্ক করা হবে সেগুলো অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে। অর্থাৎ হাই পেজ র্যাঙ্ক, ডোমেইন অথোরিটি, ভালো রেপুটেশন ইত্যাদি বিষয় আছে এমন সাইটে ব্যাকলিঙ্ক করতে হবে। আপনি যদি এমন কোন সাইটে ব্যাকলিঙ্ক করেন যেটা ইতিমধ্যে গুগোল থেকে পেনাল্টি খেয়েছে অথবা এমন কোন সাইট যেটা ডুপ্লিকেট বা কপি করা কন্টেন্ট ইউজ করেছে তাহলে আপনার সাইটের র্যাঙ্কিং বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে উল্টো কমে যেতে পারে। অর্থাৎ আপনি যদি এমন কোন সাইটে ব্যাকলিঙ্ক করেন যে সাইট গুগোল ওয়েবমাস্টার বা গুগোল কুয়ালিটি গাইডলাইন ভঙ্গ করেছে তাহলে সেই ব্যাকলিঙ্ক আপনার সাইটের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অবশ্যই ব্যাকলিঙ্কগুলো ভালো মানস্মপন্ন হতে হবে এবং সঠিক লিঙ্ক বিল্ডিং স্ট্রাটেজি ফলো করে করতে হবে।
>> এ্যাঙ্কর টেক্সট্ কিওয়ার্ডঃ এ্যাঙ্কর টেক্সট্ এর মধ্যে কিওয়ার্ড রাখাটা বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা এ্যাঙ্কর টেক্সট্ গুগোলকে লিঙ্ক সম্পর্কে একটা ভালো ধারনা দিতে পারে। ব্যাকলিঙ্ক করার সময় সেটার এ্যাঙ্কর টেক্সট্ এ টার্গেটেড কিওয়ার্ড রাখতে হবে। অর্থাৎ যদি কোন সাইট বা পেজের ব্যাকলিঙ্ক করা হয় তাহলে সেটার এ্যাঙ্কর টেক্সট্ এ Click here, Click to know more, Go to this site ইত্যাদিভাবে দেয়া ঠিক না, কারন গুগোল এগুলোকে অনেক সময় স্প্যাম হিসেবে দেখে, এজন্য এ্যাঙ্কর টেক্সট্ এ কিওয়ার্ড রাখা উচিৎ। এক্ষেত্রে বলা যায় যদি কোন কার সেলিং রিলেটেড সাইটের ব্যাকলিঙ্ক করতে হয় তাহলে সেটার এ্যাঙ্কর টেক্সট্ এ Click to buy a car, Buy a brand car, car selling company এইভাবে কিওয়ার্ড দিয়ে করা ভালো। এতে ভিজিটররা বুঝতে পারে সেখানে ক্লিক করলে কোন ধরনের পেজ ওপেন হবে, পাশাপাশি গুগোলও লিঙ্ক সম্পর্কে একটা প্রাথমিক তথ্য পায়, যার ফলে গুগোলের কাছে ব্যাকলিঙ্কগুলো মানসম্পন্ন হয় এবং পেঙ্গুইন এ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যায়। আর একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, ব্যাকলিঙ্কে কখনো কোন স্প্যাম ওয়ার্ড যেমন, Money, Free, Earn ইত্যাদি দেয়া ঠিক না।

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment